HISTORY

ইরানের ইসলামি বিপ্লব ২য় পর্ব.

"<yoastmark

ইরানের ইসলামি বিপ্লব

(২য় পর্ব )

ইমাম খোমেনী (রহ:)-র নির্বাসিত জীবনের সূচনা হয় ১৯৬৪ সালের ৪ নভেম্বর। তুরস্কে ১১ মাস রাখার পর ইমামকে ইরাকে পাঠানো হয়। ইমাম খোমেনী (রহ:)-কে ইরান থেকে সরিয়ে দেয়ার পর শাহ বিরোধী আন্দোলন সাময়িকভাবে কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে।

এ সময় শাহের নিরা পত্তা বাহিনী খোঁজে খোঁজে আন্দোলন কারীদের গ্রেফ তার করতে থাকে এবং গ্রেফ তার কৃতদের অনেককেই হত্যা করে। শাহের বাহিনীর নির্যা তনে অনেকেই পঙ্গু হয়ে যায়।

শাহের স্বৈরা চারী সরকার তার গোয়ে ন্দা ও নিরা পত্তা সংস্থা সাভাককে আগের চেয়ে আরও শক্তিশা লী করে।

সাভাক সদস্য দের প্রধান দায়ি ত্বই ছিল শাহ বিরোধী দের সনাক্ত করে তাদের গ্রে ফতার করা এমনকি প্রয়ো জনে হত্যা করা।

মার্কিন গোয়ে ন্দা সংস্থা সিআইএ এবং ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ, ইরানের সাভাকের সদস্য দেরকে এ ব্যা পারে সব ধরনের প্রশি ক্ষণ দিয়ে ছিল।

সেদিনের ইরানের মানুষ কিন্তু আজকের মতো অর্থনৈ তিক দিক থেকে এতটা সমৃদ্ধ ছিল না। কারণ তেল খাত থেকে অর্জিত অর্থ জ নক ল্যাণে ব্যয় না করে শাসক শ্রেনীর ভোগ-বি লাসে খরচ করা হতো।

জনগণের অর্থের একটা বড় অংশ ব্যয় হতো, শাহের প্রতি মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র ও দখলদার ইস রাইলের সমর্থন অটুট রাখার জন্য। ফলে ইরানের সাধারণ জনগণ অতিক ষ্টে দিনা তিপাত করতো।

ইরানের ইসলামি বিপ্লব

অন্য দিকে, শাহ সাধারণ মানুষকে অভুক্ত রেখে বিদেশী অতি থিদের ডেকে এনে কোটি কোটি ডলার খরচ করে জাঁকজমক পূর্ণ নানা উৎসব পালন করতো।

১৯৬৬ সালে শাহ তার ক্ষমতা গ্রহণের ২৫ বছর পূর্তি উপ লক্ষ্যে চোখ ধাঁধাঁ নো এক উৎসবের আয়োজন করে।

এরপর ১৯৭১ সালে ইরানে রাজ তা ন্ত্রিক শাসনের আড়াই হাজার বছর উপলক্ষে ব্যয়ব হুল এক উৎসবের আয়োজন করা হয়।

এই উৎসবে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের প্রেসি ডেন্ট, প্র ধান মন্ত্রী ও রাজা -বাদশা কে আমন্ত্র ণ জানানো হয়ে ছিল।

এই উৎসব উপল ক্ষ্যে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা হয়েছি ল।

নিজেকে পরাক্রম শালী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল সেই উৎসবের মা ধ্যমে। এখানেই শেষ নয়।

পরের বছর এই উৎসবের বর্ষপূ র্তিও পালন করা হয় বেশ ধুমধা মের সাথে।

এরপর ১৯৭৫ সালে, পাহলভি বংশের রাজ সিংহাসন দখলের ৫০ বছর পূর্তি পালন করা হয় ব্যাপক আয়ো জনের মাধ্য মে।

ইরানের সাধারণ মানুষ যখন দারুণ অর্থ কষ্টে ভুগছিল তখন

এ ধরনের ব্যয়ব হুল অনু ষ্ঠান যেন শাহের পতনকেই ত্ব রান্নিত করছিল।

ইরানের ইসলামি বিপ্লব

ইরানের সাধারণ জনগণ তখন তাদের মৌলিক চাহি দা গুলোও পুরণ করতে অপারগ ছিল।

শাহ ছিল ইসলাম বিদ্বে ষী। এ কারণে ইরানে ইসলামের প্রভাব ক্ষুন্ন করার জন্য তিনি ব্যাপক কর্মসূ চী গ্রহণ করেন।

রাজ তা ন্ত্রিক শাসনের আড়াই হাজার বছর উপল ক্ষ্যে বিশাল আয়োজ নের একটি বড় লক্ষ্য ছিল, ইরানের ইতিহাস থেকে ইসলাম ধর্মকে মুছে ফেলা।

শাহ তার ইসলাম বিরোধী তৎপরতার অংশ হিসেবে ইরানে হিজরী সালের পরি বর্তে শাহী সালের প্রবর্ত ন ঘটি য়ে ছিল।

শাহ ১৯৭৬ সালের মার্চ মাসে, আড়াই হাজার বছর আগে থেকে অর্থাৎ রাজতা ন্ত্রিক শাসন প্রতি ষ্ঠার সময় থেকে তারিখ গণনার নির্দেশ জারি করে।

ইরানে সে সময় শাহের অনুগত কয়েকটি রাজ নৈতিক দল গঠন করা হয়ে ছিল।

কিন্তু শাহ ১৯৭৫ সালে ঐসব পার্টি কেও বিলুপ্ত ঘোষণা করে নিজের নে তৃত্বে  রা স্তখিয নামক একটি দল প্রতি ষ্ঠা করে।

শাহ অর্থাৎ মোহা ম্মদ রেজা ঐ দল গঠনের পর দম্ভভরে বলেছিল, কেউ চাক বা না চাক,

ইরানের সকল মানুষই এখন একটি মাত্র দল অর্থাৎ রাস্ত খিয পার্টির সদস্য।

কেউ মেনে না নিলে তা ঘোষণা করতে পারে, তাহলে আমরা তাকে পার্স পোর্ট দিয়ে দেশ থেকে বিদায় করে দিতে পারব।

ইরানের ইসলামি বিপ্লব

আর কেউ যদি দেশ ছেড়ে যেতে না চায় তাহলে তার আশ্রয় হবে কারা গারে।

ইরানের বিপ্লব

শাহ এ ধরনের দম্ভো ক্তির জন্য সাহস পে য়েছিল মার্কিন যুক্তরা ষ্ট্র থেকে।

মার্কিন সরকার শাহকে তার ইসলাম বিদ্বে ষী পরি কল্পনা বাস্তবা য়নে সার্বিক সহ যোগিতা দিয়ে যাচ্ছি ল।

শাহ ধরেই নিয়ে ছিল যে, মার্কিন ষড় যন্ত্রে র কাছে জনগণের আন্দোলন পরাস্ত হবে

এবং তিনি আজীবন তার অ ন্যায়- অপকর্ম চালিয়ে যেতে পারবেন।

ইমাম খোমেনী (রহ:)-র অনু পস্থি তিতে ইরানে শাহ বিরোধী কয়েকটি গেরিলা সংগঠন প্রতি ষ্ঠা লাভ করে।

গেরিলা আন্দোলনে ইসলামপন্থীদের বাইরে অন্যান্য মতবাদের অনুসারীরাও যোগ দিয়েছিল।

কিন্তু এসব গেরিলা সংগঠন খুব একটা সফল হতে পারেনি।

ইমাম খোমেনী (রহ:)সহ ইরানের অধিকাংশ ধর্মীয় নেতাই মনে করতেন,

বিপ্লব সফল করার জন্য প্রথমে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।

আর এ লক্ষ্যে তারা ইসলামী শিক্ষা প্রচার এবং শাহের অন্যা য়-অপক র্ম ও

দুর্নী তির তথ্য ফাঁস করে দিতে থাকেন।

অবশ্য এ কাজটিও খুব সহজ ছিলনা।

ইরানের ইসলামি বিপ্লব

কারণ সে সময় শাহের বিরো ধিতা করলেই তাকে গ্রেফ তার করা হতো।

কোন আলেম, শাহের  জুলুম- নির্যাত নের বিরু দ্ধে কথা বললে এবং অ ন্যা য়ের  বিরু দ্ধে রুখে দাড়াবা র

আহ্বান জানালে তার ওপর অসহনীয় নির্যা তন চালানো হতো এবং নির্বাস নে পাঠানো হতো।

সে সময় পরি স্থিতি এতটাই শ্বাস রুদ্ধ কর ছিল যে, ইমাম খোমেনী (রহ:)-র প্রতি সমর্থন ঘোষণার কারণে

১৯৭০ সালে ইরানের শীর্ষ স্থা নীয় আলেম আ য়া তুল্লাহ

সাই য়্যেদ  মোহাম্ম দ রেজা

সায়ি দীকে  গ্রেফ তার করে নির্যা তনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়।

১৯৭৪ সালে একই কারণে  অপর আলেম আ য়া তুল্লা হ

গা ফ্ফা রিকে গ্রেফ তার ও হত্যা করা হয়।

এরপর ১৯৭৬ সালের জুন  মাসে ইরানের মুসলিম চি ন্তাবিদ ড. আলী শারিয়া তি

সন্দেহ জনক ভাবে মৃ ত্যুবরণ করেন।

মুসলিম ছাত্র সমাজের উপর ড. আলী শারি য়াতির ব্যাপক প্রভাব ছিল এবং মনে করা হয়, শাহের অনু চরদের ষড়য ন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন।

এতসব প্র তিবন্ধক তা র পরও ইরানের আলেমগণ ও ন্যা য়কা মীরা জনগণকে সচেতন করার প্র ক্রিয়া অব্যাহত রাখেন।

তারা শাহের জু লুম-নি র্যাতন, ভো গ-বি লাসিতা, ইসলাম বিদ্বেষ, দু র্নীতি, মার্কিন ও ইহু দিবাদ প্রীতি সম্প র্কে জনগণকে অবহিত করতে থাকেন।

ইসলামী বিপ্লব সফল হবার কয়েক বছর আগে বিশ্বে  জ্বা লানি তেলের দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাও য়ায় এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসি ডেন্ট নিক্স নের অকুন্ঠ সম র্থনের কারণে ইরানের শাহ আরও বেশি দাম্ভিক হয়ে ওঠে।

সে সময় ইরানের শাহ সরকার, গোটা মধ্য প্রা চ্যে মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষণ করার দা য়িত্ব পালন করতো।

তবে তার প্রশা সনে দু র্নীতি ও বৈষম্য ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে ছিল।

(সংগৃহীত)

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button