ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর অধিকারসমূহ (পর্ব 2)
ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর অধিকারসমূহ (পর্ব 2)
প্রথম পর্ব দেখতে ক্লিক করুন
নারীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব :
ইসলাম পুরুষের উপর নারীর ভরণ-পোষণকে ওয়াজিব (ফরজ) করেছে , যেমন তার খোরাক , পোশাক , থাকার ব্যবস্থা ইত্যাদি ।
যদি কোন নারীর অনেক সম্পদ ও নিজস্ব আয়ের উৎস থাকে তথাপিও ঐ নারীর ভরণ-পো ষণের দায়িত্ব তার স্বামীর উপর থাকবে ।
মু হাম্মদ ইবনে মুসলিম বলেন ইমাম সাদিক (আ.)-কে জি জ্ঞাসা করে ছিলাম
যে : একজন পুরুষের উপর কাদের ভরণ-পো ষণের দায়িত্ব রয়েছে ?
ইমাম সাদিক (আ.) জবাবে বললেন : পিতা -মাতা , স্ত্রী ও সন্তান ।49
নারীর উত্তরাধিকার :
ইসলাম নারীর জন্য সম্প ত্তির উত্ত রাধি কার নির্ধা রণ করেছে ।
যদি উত্তরা ধি কারী হিসেবে একজন পুত্র ও একজন কন্যা সন্তান থাকে তবে কন্যা পুত্রের অর্ধেক সম্প ত্তি পাবে ।
আবার কখনো কখনো মেয়েরা অর্ধে কের থেকেও বেশী পেয়ে থাকে যেমন যদি কোন মৃত পিতা
অথবা মাতার একটি মাত্র সন্তান থাকে এবং ঐ সন্তান যদি মেয়ে হয়
সে ক্ষে ত্রে চার ভাগের এক ভাগ পাবে মা অথবা বাবা আর চার ভাগের তিন ভাগ পাবে ঐ মেয়ে ।
আবার কখনো কখনো মেয়ে স ম্পূর্ণ সম্প ত্তিরই ভাগিদার হয় যেমন মৃতের মেয়ে ব্যতীত
অন্য কোন উত্তরা ধিকার না থাকে ।
স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকেও চার ভাগের এক ভাগ সম্প ত্তি পেয়ে থাকে যদি তাদের কোন সন্তান না থেকে থাকে ।
আর যদি সন্তান থেকে থাকে তবে আট ভাগের এক ভাগ পাবে ।
মা আবার তার সন্তা নদের কাছ থেকে ছয় ভাগের এক ভাগ স ম্পত্তি পেয়ে থাকে ।
কোন কোন ক্ষে ত্রে এর থেকেও বেশী পেয়ে থাকে ।
ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর অধিকারসমূহ
এ ক্ষে ত্রে যে বিষয়টি গুরু ত্ব পূর্ণ তা হচ্ছে ইসলাম নারীদের জন্য উত্ত রাধি কার নি র্ধারণ করেছে ।
নারিগণ কয়েকদিক থেকে সম্প ত্তি পেয়ে থাকে যেমন : মেয়ে হিসেবে বাবার কাছ থেকে ,
মা হিসেবে স ন্তান দের কাছ থে কে এবং স্ত্রী হিসেবে স্বামীর কাছ থেকে ।
নারীর অধিকার নিশ্চিত করা :
জাহে লি য়া তের যুগে এটা রেওয়াজ ছিল যে , শুধু মা ত্র পুরু ষকেই সবাই উত্ত রা ধি কারী হিসেবে মনে করতো ।
আর এটায় বিশ্বা সী ছিল যে ,
যারা অস্ত্র হাতে নিজের আ ত্ম- সম্ভ্রম রক্ষার লক্ষ্যে যুদ্ধ ও প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তারাই হচ্ছে
উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি পাওয়ার যোগ্য ।
আর যারা তা পারবে না তারা উ ত্তরাধি কারী হওয়া সত্বেও সম্পত্তি পাবে না ।
আর এই দলিলের ভিত্তিতে নারিগণ কে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতো এবং
মৃতের সম্পত্তিকে পুরুষদের মধ্যে বণ্টন করে দিত ।
অনেক দূরের পুরুষ আত্মীয়-স্বজনও এই সম্প ত্তির ভাগ পেতো ।
ইসলাম সম্পত্তি বণ্টনে এই ভুল প্রক্রি য়া র তী ব্রভাবে বিরোধিতা করে
এবং নারী ও শিশুদের যোগ্য অধিকার যা অন্যরা অন্যায়ভাবে ভোগ করছিল
তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে প্রকৃত পাওনাদারের হাতে অর্পণ করছে ।
এ পর্যায়ে পবিত্র কোরআন বলেছে :
) لِّلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِّمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنْهُ أَوْ كَثُرَ نَصِيبًا مَّفْرُوضًا(
পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে যেমন পুরুষের অংশ রয়েছে
তেমনি পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজদের রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে নারীরও অংশ রয়েছে ।
তা সে যতই কম বা বেশী হোক না কেন । আর এই অংশ তাদেরকে দেয়াটা হচ্ছে ওয়াজিব (ফরজ) ।50
ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর অধিকারসমূহ
জাহেলি যুগের আরো একটি অন্যায় প্রথা ছিল যে ,
তখনকার পুরুষরা অসুন্দরী বয়স্ক ধনী মহিলাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হত এবং
পরবর্তীতে বিয়ের পূর্বেকার অবস্থায় রেখে দিত অর্থাৎ না তাদেরকে স্ত্রীর মর্যাদা দিত না তাদেরকে তালাক দিত ।
এ কাজের অর্থ হচ্ছে তারা শুধুমাত্র দিন গুনতো যে , কবে তারা মৃত্যুবরণ করবে ।
কারণ তারা মৃত্যুবরণ করলেই স্বামী হিসেবে তারা ঐ সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবে ।
কিন্তু ইসলাম তাদের এরূপ জুলুম ও অত্যাচারমূলক কাজের নিন্দা করেছে ও
তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে :
) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَرِثُوا النِّسَاءَ كَرْهًا(
যারা ঈমান এনেছো , তোমাদের জন্য এটা বৈধ নয় যে ,
জবরদস্তি করে (তাদেরকে কষ্ট দিয়ে) তাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে ।51
কেন নারী , পরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে ?
ইমাম সাদিক (আ.)-এর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে : কেন নারী , পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে ?
ইমাম এই প্রশ্নের জবাবে বললেন : এর কারণ হচ্ছে যে , জিহাদ করা ,
সংসার পরিচালনার খরচ এবং দিয়াহ্ ( রক্তপণ ) দেয়া নারীর উপর ওয়াজিব ( ফরজ ) নয় ।52
যেভাবে ইমাম বলেছেন , জিহাদ করা নারীর উপর ওয়াজিব নয় ।
প্রথমত প্রয়োজনে পুরুষকে দ্বীন রক্ষার লক্ষ্যে অবশ্যই জিহাদ করতে হবে ,
দ্বিতীয়ত নারীর ভরণ-পোষণের খরচ স্বামীকেই বহন করতে হবে যদিও স্ত্রী অনেক ধনী হয়ে থাকে ,
তৃতীয়ত কখনো ভুলবশত পরিবারের কোন সদস্যের হাতে বাইরের কেউ নিহত হলে
সেক্ষেত্রে পুরুষকেই ঐ হত্যা বাবদ দীয়াহ্ (রক্তপণ) প্রদান করতে হয় কিন্তু নারী এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ দায়হীন ।
চতুর্থত যখন নারী বিয়ে করে তখন সে দেনমোহর বাবদ স্বামীর পক্ষ থেকে কিছু গ্রহণ করে থাকে ।
এ সব কারণে বলা যায় যে , নারীরা হচ্ছে গ্রহণকারী এবং পুরষরা হচ্ছে খরচকারী ।
আর তাই পুরুষের সম্পত্তির অংশ নারীর দ্বিগুণ হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত যাতে করে ভারসাম্যের সৃষ্টি হয় ।
Hæ, ég vildi vita verð þitt.